দেশ স্বাধীনের ৫০ বছরের মধ্যে ১৫ বছরই বিএনপি নৈরাজ্য চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন – সজীব ওয়াজেদ জয়।

জীবনযাপন ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রবাস

দেশ স্বাধীনের ৫০ বছরের মধ্যে ১৫ বছরই বিএনপি নৈরাজ্য চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে, প্রথম ২০ বছরের মাত্র সাড়ে ৩ বছর ছিল গণতন্ত্র। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর, টানা ১৫ বছর জিয়াউর রহমান ও এরশাদের মতো সামরিক শাসকদের হাতে জিম্মি হয়েছিল এই দেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে এই একনায়কতন্ত্রের পতন ঘটান এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেন। ১৯৯১ সালে গণতন্ত্র ফিরলেও, ক্ষমতায় বসেন খালেদা জিয়া। সামরিক একনায়ক জিয়াউর রহমানের পাকিস্তানি ভাবধারার আদর্শে হৃষ্ট-পুষ্ট এই নাম-কা-ওয়াস্তের গণতন্ত্র আরো বেশি ক্ষতির কারণ হলো। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মোট দুই মেয়াদে, বিএনপির ১০ বছরে, দেশে উগ্রবাদী গোষ্ঠী পাকাপাকিভাবে খুঁটি গেড়ে বসে। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছরের মধ্যে ২৫ বছরই ক্ষমতায় ছিল জিয়া-এরশাদ-খালেদা-তারেক চক্র। আর তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী ছিল খুন ও ধর্ষণের মাস্টারমাইন্ড স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের ঘৃণিত নেতাকর্মীরা।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, “কিন্তু গত এক যুগ টানা সরকারে থেকে দেশকে তাদের হিংস্র থাবা থেকে রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যেভাবে সোনার বাংলা গড়োর উদ্যোগ নিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করেছেন। মানুষের অর্থনৈতিক জীবন যেমন পরিবর্তন হয়েছে, তেমনি ভূলুন্ঠিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়েছে এই সময়ে।”
তিনি লিখেছেন, “কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, আমাদের স্বাধীনতার চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ৈ এখনো নোংরা রাজনীতি করে যাচ্ছে বিএনপি। অথচ স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে, জিয়া পরিবারের নেতৃত্বে, বিএনপি ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে, বাঙালি জাতীয়তাবাদ- হাজার বছরের বাঙালি সংষ্কৃতি- অসাম্প্রদায়িকতা- শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছিল। তাদের হাত রঞ্জিত হয়েছে শত শত মুক্তিযোদ্ধার রক্তে। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ও জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল তারা।”
প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যার পর রাতারাতি ক্ষমতাবান হয়ে ওঠে যে, সেই ব্যক্তির নাম জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম-নিশানা মুছে ফেলতে আমৃত্যু চেষ্টা চালিয়ে যায় জিয়া গং। ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসে নিজেকে সেনাবাহিনীর প্রধান ও উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সে। মূলত তখন থেকেই বন্দুক হাতে রাষ্ট্র চালাতে শুরু করে জিয়া। ১৯৭৭ সালে সে দখল করে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদ। এরপর দীর্ঘ মেয়াদে সেই ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য, ১৯৭৮ সালে সেনানিবাসে বসে গঠন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। নিজেকে সবসময় একজন মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করলেও, স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান তার দলটি গঠন করে কুখ্যাত রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে সঙ্গে নিয়ে। এরপর আমৃত্যু বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধবিরোধী অপতৎপরতা চালিয়ে গেছে সে।”
তিনি আরো বলেন, “শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও একই পথে হেঁটেছেন, দেশজুড়ে তাণ্ডব চালানোর সুযোগ করে দিয়েছেন জামায়াত ও উগ্রবাদী দেশবিরোধী গোষ্ঠীকে। এমনকি তাদের ছেলে তারেক রহমান ছাড়িয়ে যাচ্ছিলো বাবা-মাকেও। আন্তর্জাতিক জঙ্গি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশকে অস্থির করে তুলেছিল সে। এমনকি এখনো বিদেশে বসে দেশ নিয়ে নোংরা খেলায় মেতে ওঠে এই বিএনপি নেতা। বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করে জাতীয়ভাবে ধিক্কৃত হয়ে; নিজের দুর্নীতি, জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতা ও হত্যার মিশনগুলো চাপা দিতে; বিএনপি তথা রাজনৈতিক নেতার পরিচয় ব্যবহার করে লন্ডনে ফেরার হয়ে আছে সে। দলটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের ঢাল হিসেবে, এখনও তারা সেই কাজই করে যাচ্ছে!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *