ড.ওয়াজেদ মিয়ার চিন্তার মূল প্রতিপাদ্য ছিল আমৃত্যু দেশের সার্বিক কল্যাণ সাধন : শেখ হাসিনা

জাতীয় মফস্বল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া তাঁর কর্ম জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত দেশের কল্যাণে ব্যয় করেছেন। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশের সার্বিক কল্যাণ সাধনই ছিল তাঁর চিন্তার মূল প্রতিপাদ্য। তিনি বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ (সুধা) মিয়ার ৮২তম জন্মবার্ষিকীতে স্মরণিকা প্রকাশ উপলক্ষ্যে প্রদত্ত এক বাণীতে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ (সুধা) মিয়ার ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগারের’ পক্ষ থেকে ‘বাতিঘর’ নামক স্মরণিকা প্রকাশের উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘এ উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি রইলো আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন’। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং প্রথম শিক্ষা কমিশন রিপোর্টে দেশের গ্রন্থাগার ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের ওপর বিশেষ গুরুত আরোপ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ‘আমরা গ্রন্থাগারকে যে কোনো জাতির উন্নয়নের একটা প্রধান সূচক হিসেবে বিবেচনা করি। আমাদের সরকার মনে করে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে গ্রন্থাগার ব্যবস্থার উন্নয়নের বিষয়টি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এ কারণে তৃণমূল পর্যায় থেকে গ্রন্থাগারভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১০ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে গ্রন্থাগার পেশাজীবীর পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার গড়ে তুলতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে আমরা দেশের ১ হাজারটি সরকারি ও বেসরকারি গ্রন্থাগারে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার স্থাপন করেছি। যেখানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বইসমূহ সংগ্রহে রাখা হয়েছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম বইসমূহ পড়ে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার সুযোগ পাচ্ছে। আমাদের দেশের গ্রন্থাগারসমূহ তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়ায় আন্তর্জাতিক মানের গ্রন্থাগারসমূহের মতো উন্নত এবং সমৃদ্ধ হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রন্থাগারগুলোকে ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সকল ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর ও সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের ভবন নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে। জাতির পিতার পৈত্রিক নিবাস গোপালগঞ্জে ‘শেখ লুৎফর রহমান গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র’ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে ।’
শেখ হাসিনা স্মরণীকার জন্য প্রদত্ত বাণীতে আরো বলেন, পাকিস্তানীদের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সব সময় সোচ্চার ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধেও তার বিশেষ অবদান ছিল। এই নিরহংকার, নির্লোভ, ক্ষমতাবিমুখ মানুষটি তাই সর্বজন শ্রদ্ধেয় স্মরণীয়। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার স্মৃতি ধরে রাখার উদ্দেশ্যে তাঁর স্নেহধন্য কয়েকজন বইপ্রেমি মানুষ ২০১৪ সালে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি প্রত্যাশা করেন, বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগার সারা বাংলাদেশে তাদের কর্মকা- বিস্তৃত করবে এবং প্রতিটি পাঠকের দোড়গোড়ায় বই পৌঁছে দিবে। পাশাপাশি আলোকিত সমাজ ও জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *