দেশে নদী দখলদার ৬৫ হাজার ১২৭ জন: সংসদে নৌ প্রতিমন্ত্রী

ডিজিটাল বাংলাদেশ মফস্বল সর্বশেষ

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের বিভিন্ন নদীর তীরভূমি হতে এ পর্যন্ত ২১ হাজার ৪৪৩টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে ৭২৩ দশমিক ৬২ একর তীরভূমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের টেবিলে উত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দেশের নদীসমূজ দখলমুক্ত করার জন্য ২০১০ সাল থেকে অভিযান চালানো হচ্ছে। যার মধ্যে ঢাকা নদীবন্দরে ১৬ হাজার ৪২৪, নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে চার হাজার ৭৬৯, বরিশাল নদীবন্দরে ১৪১, আশুগঞ্জে ৫০ ও নওয়াপাড়া নদীবন্দরে ৫৯ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন সব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দেশের নদ-নদীর অবৈধ দখলদারদের তালিকা করা হয়েছে। এতে সারা দেশে ৬৫ হাজার ১২৭ জন অবৈধ নদী দখলদার রয়েছেন।

এ জন্য সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে প্রায় ১৯ হাজার ৮৭৪ জন অবৈধ নদী দখলদারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদী দখল রোধে সারাদেশে সংশ্লিষ্ট দপ্তর/সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নদীর তীরভূমি পুনর্দখল রোধকল্পে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসেবে নদীর উভয় তীরে ওয়াকওয়ে, আরসিসি স্টেপস, বসার বেঞ্চ, বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ, নদীরপাড় বাঁধাই, গাইড ওয়াল নির্মাণ, বৃক্ষরোপন ইত্যাদি কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ঢাকার চারিদিকে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা, বালু ও ধলেশ্বরী নদীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১১০ কিলোমিটার বৃত্তাকার নৌপথের দুই তীরে অবস্থিত ২২০ কিলোমিটার তীরভূমিতে প্রথম পর্যায়ে ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে এবং দুটি ইকোপার্ক (নারায়ণগঞ্জের খানপুর, পুরাতন ঢাকার শ্যামপুর) নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে “বুড়িগঙ্গা , তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়)” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে ও আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। ওই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এবং টঙ্গী নদীবন্দর এলাকায় ৪ হাজার সীমানা পিলার নির্মিত হয়েছে এবং দেড় হাজার সীমানা পিলারের নির্মাণকাজ চলমান।
তিনি বলেন, এছাড়া রামচন্দ্রপুর হতে বসিলা ও রায়েরবাজার খাল হতে কামরাঙ্গীরচর পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মিত হয়েছে। অবশিষ্ট ৪৮ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের মধ্যে ২৭ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের নির্মাণকাজ চলছে। ২১ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের দরপত্র ৯ নভেম্বর গ্রহণ করা হয়েছে। টঙ্গী নদীবন্দর এলাকায় একটি ইকোপার্ক নির্মিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তৃতীয় পর্যায়ে “বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক “ঢাকা শহরের চারপাশে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়) ” শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়ণ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের চারপাশে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে সীমানা পিলার স্থাপন করায় অবৈধ দখল হ্রাস পেয়েছে। সীমানা পিলার স্থাপনকাজ সম্পন্ন হলে অবৈধ দখল সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা হবে বলে আশা করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *