‘পুতিন মস্তিষ্ক’ কে এই দুগিন

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ান দার্শনিক আলেকজান্ডার দুগিনের ২৯ বছর বয়সি মেয়ে দারিয়া দুগিন মস্কোতে একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন।

রোববার রুশ গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শনিবার রাতে একটি অনুষ্ঠান থেকে বাবা-মেয়ের একই গাড়িতে করে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তবে আলেকজান্ডার শেষ মুহূর্তে অন্য এক গাড়িতে ওঠেন। পরে এক বিস্ফোরণে তার মেয়ে দারিয়া দুগিন নিহত হন। এ হামলার লক্ষ্য আলেকজান্ডারই ছিলেন কিনা, তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।

কে এই দুগিন

আলেকজান্ডার দুগিন ক্রেমলিনে আনুষ্ঠানিক কোনো পদে না থাকলেও রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তিনি ‘পুতিনের রাসপুতিন’ নামে পরিচিত।

তার পশ্চিমা-বিরোধী ও উগ্র-জাতীয়তাবাদী দর্শন রাশিয়ায় প্রভাবশালী রাজনৈতিক মতাদর্শে পরিণত হয়েছে যা প্রেসিডেন্ট পুতিনের সম্প্রসারণবাদী পররাষ্ট্র নীতি তৈরিতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে ইউক্রেনের ব্যাপারেও দুগিনের দর্শনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

অনেকে মনে করেন ক্রিমিয়ার মতো ইউক্রেনে হামলার পেছনেও ‘পুতিনের মস্তিষ্ক’ নামে পরিচিত আলেকজান্ডার দুগিনই দায়ী। তার মেয়ে দারিয়া দুগিনও মস্কোর এসব হামলার সমর্থক ছিলেন।

অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে অনলাইনে ‘বিভ্রান্তি’ ছড়ানোর অভিযোগে যুক্তরাজ্য কর্তৃক দারিয়া দুগিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।

মে মাসে তিনি একটি সাক্ষাৎকার দেন যেখানে তিনি এই যুদ্ধকে ‘সভ্যতার সংঘর্ষ’ বলে উল্লেখ করেন। শুধু তাই নয়, পশ্চিমা দেশগুলো যে তার ও তার পিতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, সেজন্য তিনি তার গর্বের কথাও প্রকাশ করেছিলেন।

রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল করে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে আলেকজান্ডার দুগিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

বিশ্ব রাজনীতির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের যে দৃষ্টিভঙ্গি তার ওপর দুগিনের লেখার গভীর প্রভাব রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এবং উগ্র-জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ তৈরিতে তিনি একজন প্রধান বুদ্ধিজীবী হিসেবেও বিবেচিত। ক্রেমলিনের অনেক কর্মকর্তাই তার এই আদর্শ অনুসরণ করেন।

রাশিয়া যেন বিশ্বমঞ্চে নিজেকে আরো আক্রমণাত্মকভাবে জাহির করে সেজন্য আলেকজান্ডার দুগিন কয়েক বছর ধরেই মস্কোর প্রতি আহবান জানিয়ে আসছেন।

এদিকে অধিকৃত দনেস্ক অঞ্চলের রুশ নেতা ডেনিস পুশিলিন বিস্ফোরণের জন্য ইউক্রেন সরকারের সন্ত্রাসীদের দায়ী করে বলেছেন, সন্ত্রাসীরা আলেকজান্ডার দুগিনকে নিষ্ক্রিদ্ধয় করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু তারা তার মেয়েকে উড়িয়ে দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে তিনি লেখেন, দারিয়া একজন সত্যিকারের রাশিয়ান মেয়ে। আলেকজান্ডারের শেষ মুহূর্তে গাড়ি পরিবর্তনের বিষয়টি ইঙ্গিত করছে তিনি কোনোভাবে হামলার আশঙ্কা করছিলেন এবং হয়তো নিজের অজান্তেই তা থেকে সরে গিয়েছিলেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *