বাংলাদেশকে ৭০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে চায় বিশ্বব্যাংক

অর্থনীতি সর্বশেষ

বাংলাদেশকে সহজ শর্তে নতুন করে ৭০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে চায় বিশ্বব্যাংক। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করতে চায় বিশ্ব ব্যাংক। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি আব্দুলায়ে সেক। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য ৭০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। এরমধ্যে ৩১৫ মিলিয়ন ডলার রোহিঙ্গাদের জন্য, আর বাকি ৩৮৫ মিলিয়ন ডলার রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য সফট লোন। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৫৬ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আছে এবং বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাথে কার্যক্রম আরো বৃদ্ধির কথা বলেছেন।

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি না করার অনুরোধ জানিয়ে ১২ মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠি নিয়েও কথা বলেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা আদালতের বিষয়। এ নিয়ে সরকারের কিছু করার নেই।

সম্প্রতি উগান্ডায় অনুষ্ঠিত ১৯তম ন্যাম সামিট এবং ৩য় সাউথ সামিটে যোগদান শেষে দেশে ফিরেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সামিটে তার যোগদানের বিষয়েও এসময় কথা বলেন আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ন্যাম ও সাউথ সামিটে সব দেশ বাংলাদেশের নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। পাশাপাশি একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছেন। এছাড়া, উগান্ডা সফরে দেশটির জমি লিজ নিয়ে তুলা, পামঅয়েল চাষের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত একটি বাণিজ্যিক দল দেশটিতে যেতে পারে। পাশপাশি আফ্রিকার দেশগুলোতে কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিষয়ে কথা হয়েছে।

বিএনপির প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে, কাজের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এসব দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে, তারা আরো আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আসার পর থেকে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য অনেকটাই কমেছে। আমরা আবার দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করেছি। মিয়ানমার থেকে নানাভাবে মাদক আসে এবং সেখানে বিভিন্ন গ্রুপ নিজেরা বিবদমান থাকলেও একত্রে মাদক ব্যবসায় জড়িত সেটি তারা স্বীকার করেছেন এবং এর প্রতিকারের উদ্যোগ নিতে সম্মত হয়েছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতকেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলো নিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, উগান্ডায় কৃষির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটিতে তুলা চাষ করা যায়। পাম ওয়েলও চাষ করা যায়। আমরা পরিকল্পনা করছি, শিগগিরই একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল সেখানে পাঠাবো।

বেলারুস, ব্রাজিল ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা প্রত্যেকে আগ্রহ দেখিয়েছে। সিঙ্গাপুর, বাহরাইন, সৌদি আরব, কাতারসহ যেসব দেশে আমরা জনশক্তি রপ্তানি করি সেখানে প্রতিবন্ধকতা বা সমস্যা সমাধানের জন্যও আলাপ হয়েছে এবং পাশাপাশি ফিলিস্তিন, নেপাল, বেনিন, বতসোয়ানার সাথেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা জানান মন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *