বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নতিতে মুগ্ধ সান ওয়েইডং

ডিজিটাল বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তির সংবাদ

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার সান ওয়েইডং বলেছেন, তিনি ১০ বছর পর বাংলাদেশ সফর করছেন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন দেখে খুবই মুগ্ধ।

শনিবার (২৭ মে) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও চীনের দ্বাদশ পররাষ্ট্র দপ্তরের আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। এতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও চীনা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার সান ওয়েইডং।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় প্রতিনিধি দল পারস্পরিক স্বার্থ ও বহুপাক্ষিক ফোরামে সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। চীনা পক্ষ এক চীন নীতিতে অব্যাহত সমর্থনের জন্য বাংলাদেশের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করেছে। তারা সাম্প্রতিক উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক বিষয় বিনিময় ও বৈঠকের কথা স্মরণ করেছেন যা সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরো গভীর করেছে। কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় চীনের ভ্যাকসিন সহায়তার জন্য বাংলাদেশ আবারো ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে।

বৈঠকে উভয় পক্ষ বাংলাদেশের বিভিন্ন মানের অবকাঠামো প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল ও পদ্মা সেতু রেল সংযোগের মতো মেগা প্রকল্পের আসন্ন উদ্বোধনকে স্বাগত জানায়।

উভয় পক্ষই বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ খাতে কয়েকটি অতিরিক্ত প্রকল্প প্রস্তাব সংক্রান্ত অসামান্য বিষয়গুলোকে আরো এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষ ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া ৯৮ শতাংশ পণ্যে শুল্ক ও কোটা ফ্রি সুবিধা (ডিএফকিউএফ) ব্যবহার করে চীনে রপ্তানি বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা করেছে।

চীনা পক্ষ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফল আমদানিতে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা প্রয়োজনীয় মানের স্পেসিফিকেশন মেনে বাংলাদেশ থেকে আম, কাঁঠাল, পেয়ারা ও হিমায়িত খাবার নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের সাথে বিদ্যমান বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা কমাতে ডিএফকিউএফ সুবিধার আওতায় শাকসবজি, ওষুধ, কাঁচা চামড়া, জুতামোজা, নন-নিট পোশাক ইত্যাদির মতো অন্যান্য রপ্তানি আইটেম অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ওয়েইডং চট্টগ্রামে চীনা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনের ব্যবাসায়ীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করার আশ্বাস দেন। তারা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-গুয়াংঝু সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে চীনা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আগ্রহের কথা জানান।

বিশেষ করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দুই পক্ষ নিয়মিত কনস্যুলার পরামর্শ চালু করতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি ও বায়োটেকনোলজিতে উদ্ভাবনের বিষয়ে চীনের সঙ্গে একত্রে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উভয় পক্ষ চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের পৃষ্ঠপোষকতায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সংযোগে অবদান রাখতেও আগ্রহ দেখিয়েছে।

উভয় পক্ষ বিদ্যমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে ও নিয়মিত স্টাফ পর্যায়ের আলোচনা ও বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছে। অনলাইন জুয়া ও মাদক পাচারের মতো নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষমতা তৈরিতে চীন সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। জননিরাপত্তা ইস্যুতে সংলাপে দুই পক্ষ নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আবহাওয়া স্যাটেলাইটের তথ্য শেয়ার করার জন্য বাংলাদেশ চীনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

এর আগে শুক্রবার রাত ১১টা ২৫ মিনিটে ভাইস মিনিস্টার ওয়েইডং দুই দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *