বিএনপির ভরাডুবির কারণ বিএনপি নিজেই। ফেসবুকে সজীব ওয়াজেদ

ডিজিটাল বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তির সংবাদ রাজনীতি

২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মন্তব্য করলেও সন্ধ্যায় ফলাফল গণনা শুরু হওয়ার পর থেকে সুর পাল্টে ক্রমাগত মিথ্যাচার চালিয়ে যায় বিএনপি, যা আজও চলছে। এ মন্তব্য করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের তৎকালীন বক্তব্যের ভিডিও একসঙ্গে শেয়ার করে তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যায় মির্জা ফখরুল-কামাল হোসেনদের ভোল পাল্টে যায় এবং তারা নিজেদের ব্যর্থতার জন্য সরকারকে দায়ী করে বক্তব্য দিতে থাকেন।’ শুক্রবার রাতে ৩৫ মিনিটের এক লাইভ ভিডিওতে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) চেয়ারম্যান সজীব ওয়াজেদ ভিডিওতে বলেন, ২০১৮ সালে ওই নির্বাচনের দিন দুপুরে ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে বলে বক্তব্য দেন। সেই সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বিএনপির বিভিন্ন সারির নেতাকর্মীরা। কিন্তু সন্ধ্যায় ভোটের ফলাফল গণনা শুরু হলে তারা নিজেদের অবস্থান পাল্টে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তৎকালীন বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন ভোট দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি ভোট দিতে উৎসাহিত হয়েছি শীতের সকালে এত লোককে ভোট দিতে দেখে। যেখানে ভোট দিয়েছি সেখানে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। তবে নির্বাচনের ফলাফল দেখার পর সিদ্ধান্ত নেব যে, নির্বাচনের ফল মেনে নেব কিনা।

সজীব ওয়াজেদ বলেন, শেষ পর্যন্ত অবশ্য ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য অনুসরণ করে নির্বাচনের ফলাফলে ব্যাপক ভরাডুবি দেখে ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট। কিন্তু তখন থেকে এখন পর্যন্ত তাদের এই ভোট বর্জনের পক্ষে তথ্যপ্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয় দলটি। ‘রাতের ভোট’ এ কথা বারবার বিভিন্ন আলোচনায় ও টক শোতে বললেও এর স্বপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেনি বিএনপি-জামায়াত ও তাদের জোট।

ভিডিওতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, ২০১৮ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জামায়াতে ইসলাম একটি কেন্দ্র দখলের জন্য গুলি করে যেখানে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করা হয় নোয়াখালীতেও। বিএনপি নেতারা এই হামলা চালায় বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে। নোয়াখালী-২ আসনে এক আনসার সদস্য নিহত হন। একইভাবে কুষ্টিয়ায় নিহত হন এক আনসার সদস্য। সেখানেও কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে জামায়াত-বিএনপি সমর্থকেরা।

২০০১ সালের ভোটে ১ কোটি ২১ লাখ ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্ত ও ভোট কারচুপির তথ্য তুলে ধরেন ভিডিওতে। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীদের কেন্দ্র থেকে কোনো সমর্থন না পাওয়ার অভিযোগও মিলেছে একাধিক গণমাধ্যমে। ভিডিওর শেষ অংশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে খালেদা জিয়ার বক্তব্য তুলে আনা হয়, যেখানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া জানিয়েছেন, কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ লেখেন, নির্বাচনে বিপুল ভোটে পরাজিত দল বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এমনকি আওয়ামী লীগ বিরোধী সংবাদমাধ্যমেও ‘রাতের ভোট’ তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিরলস চেষ্টা চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। এখন পর্যন্ত তাদের দাবির পক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণও তারা হাজির করতে পারেননি। বিদেশি পর্যবেক্ষক দলের প্রতিনিধিরা নির্বাচনটিকে সুষ্ঠু বলে রায় দিয়েছিলেন। বিএনপির ভরাডুবির কারণ বিএনপি নিজেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *