বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে বিত্তবানদের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করত খোকন আকন্দ। এরপর তার সহযোগী বিলকিস বিভিন্ন নাম-পরিচয়ে কল করে বা এসএমএস পাঠিয়ে প্রথমে বন্ধুত্ব ও পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলত। পরের ধাপে কৌশলে প্রলুব্ধ করে টার্গেট করা ব্যক্তিকে ডেকে নেওয়া হত সুবিধাজনক স্থানে। সেখানে তারা অন্তরঙ্গ হতেই খোকন সাংবাদিক বা পুলিশ পরিচয়ে হাজির হয়ে তাদের ছবি তুলত। সেই ছবি পরিবারের কাছে পাঠানো বা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হত মোটা অংকের টাকা।
বৃহস্পতিবার ঢাকার সাভার এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন, চেক বইয়ের পাতা ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়।
ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল হক জানান, মোবাইল ফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে প্রেমের নাটক সাজায় চক্রের নারী সদস্য। এরপর সুযোগ বুঝে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করা হয়। কখনও টার্গেট ব্যক্তি তাদের ফাঁদে পা দিতে না চাইলে নানারকম ভয় দেখিয়ে তাকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হয়। মূলত ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই তাদের কাজ।
তিনি আরও বলেন, তাদের প্রতারণার শিকার এক ভুক্তভোগী গত ২৬ অক্টোবর রাজধানীর দারুসসালাম থানায় মামলা করেন। সেই মামলাটি তদন্ত করে অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ধরনের অপরাধের ফাঁদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে অনলাইনে পরিচিত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারও বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন ডিবির এই কর্মকর্তা। সেইসঙ্গে অল্পদিনের সম্পর্কে কারও প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে একান্তে মিলিত না হওয়া, যাচাই-বাছাই ছাড়া সম্পর্কে না জড়ানো, অপরিচিত বা অল্প পরিচিত কারও কথায় কোনো স্থানে না যাওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।