সহিংসতার চিত্র দেখে স্তব্ধ কূটনীতিকরা

রাজনীতি সর্বশেষ

২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের নামে বিএনপির সহিংসতার ভিডিও দেখে অবাক হয়েছে ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকরা। স্তব্ধ হয়ে তারা দেখেছেন ওইসব ভিডিও। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সামনে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতার বর্ণনা, ক্ষতির বিষয়গুলোর সরকারি ভাষ্য তুলে ধরার পর তারা এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। এ সময় ২৮ অক্টোবরের সার্বিক ঘটনার অডিও-ভিডিও উপস্থাপন করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের আমন্ত্রণে বৈঠকে অংশ নেন ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, চীনা রাষ্ট্রদূতসহ ৪৫টি কূটনীতিক মিশনের রাষ্ট্রদূত/প্রতিনিধি। ২৮ অক্টোবরের বিষয়ে তাদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব ও মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ২৮ অক্টোবর যা ঘটেছে তাতে আমরা মর্মাহত। যদিও অতীতে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার অভিজ্ঞতা থাকায়, আমরা এতটা বিস্মিত হইনি। দুঃখের সঙ্গে বলছি, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম তারা বদলাবে, কিন্তু তারা পাল্টায়নি। এ সংক্রান্ত একাধিক প্রেজেন্টেশন পেপার কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে তুলে ধরা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রার নামে বিএনপির সংঘাত-সহিংসতার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা দরকার। গত কয়েকদিনে তারা যা করেছে, তার মূল উদ্দেশ্য আসছে নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু না হয়। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য তারা এ ধরনের অপকর্ম করেছে। বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তাদের (বিএনপি) অনুরোধ করব, আপনারা নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়। আমরা আমাদের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করব। রাজনৈতিক সহিংসতা করে সরকার পতনের চেষ্টা অলীক।
এ সময় আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে যে প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন সে ব্যাপারে আমরা কূটনীতিকদের পুনর্ব্যক্ত করেছি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। কূটনীতিকদের কোনো প্রশ্ন আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে তারা ব্রিফিংয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ২৮ তারিখে যেসব ঘটনা ঘটেছে, ওইদিন তাৎক্ষণিক যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে; সেগুলো বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠিয়েছি। আজকের আবার সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ ছবিসহ তাদের নানা ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে। বিদেশি কূটনীতিকদের বক্তব্য কী ছিল, জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, তাদের অভিব্যক্তি দেখে বোঝা গেছে, তারা এসব দেখে খুব অবাক হয়েছেন। পুলিশ হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার স্থিরচিত্র, ভিডিও ফুটেজ দেখে বিদেশি কূটনীতিকরা স্তব্ধ হয়ে যান। সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ এবং ছবির লিংক ই-মেইল করে দূতাবাসগুলোতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। সেসব ঘটনা প্রিন্ট করেও কূটনীতিকদের দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপির সংশ্লিষ্টতায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দেয়া মিঞা জাহিদুল ইসলাম আরেফীর কর্মকাণ্ডের কথাও কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *